Posts

Showing posts from April, 2025

দুনিয়ার অদৃশ্য শৃঙ্খল — শেখ মিজান

রাজ্য দখল করে, মানুষকে শিকল পরিয়ে দাস বানানো যায়—এটা ইতিহাসের পরিচিত অধ্যায়। জুলিয়াস সিজার থেকে শুরু করে চেঙ্গিস খান পর্যন্ত, অনেক সাম্রাজ্যবাদীই এই কৌশলে সাফল্য পেয়েছে। কিন্তু সেই দাসত্ব কখনো না কখনো টুটে গেছে। বিদ্রোহ হয়েছে, বিপ্লব হয়েছে, মানুষ মুক্ত হয়েছে। কিন্তু এক নতুন দাসত্ব এসেছে—আর এ দাসত্ব চোখে দেখা যায় না, শিকল নেই, শাসকের ঘোড়া নেই, তলোয়ার নেই। আছে শুধু ভয়, অন্ধবিশ্বাস, আর একটা শব্দ—মরু সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি বলে, প্রশ্ন কোরো না, চিন্তা কোরো না, চোখ বন্ধ রাখো, আর ‘স্বর্গে সুখ পাবে’ বলে মগজে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় এক ধরনের মাদক। একটা দৃশ্য কল্পনা করুন: > সাটক: “আচ্ছা ভাই, তুমি এইসব পাথরের সামনে মোমবাতি জ্বালাও কেন?” নীরব এক যুবক: “আমার দাদার দাদারাও জ্বালাতো… তারা তো ভুল হতেই পারে না।” এই ‘তারা তো ভুল হতেই পারে না’—এই বাক্যই হলো সেই অদৃশ্য শিকল। স্বাধীনতার পর, আমরা ভেবেছিলাম মুক্ত হয়েছি। কিন্তু সেই মুক্তির পেছনে রেখে যাওয়া হয়েছিল এক বিষবৃক্ষ। ধর্ম, সংস্কৃতি, জাতীয়তাবাদ—সবকিছু মিশিয়ে এক অদ্ভুত মিশ্রণ তৈরি করা হলো, যার নাম দেওয়া হলো "চিরাচরিত মূল্যবোধ"। এটা এমন ...

বাংলাদেশের ইতিহাস দুই চার কথায়

বাংলাদেশের ইতিহাস দুই চার কথায় সংক্ষিপ্ত কিছু তথ্য  - শেখ মিজান ১৯৫০-এর দশক: পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক চেতনার উত্থান ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন: পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা শহীদ হন, যা পরবর্তীতে স্বাধীনতার বীজ রোপণ করে। জমিদারি উচ্ছেদ আইন (১৯৫০): পূর্ব পাকিস্তানে জমিদার প্রথা বিলুপ্ত হয়, কৃষকদের ভূমির অধিকার সুরক্ষিত হয়। ১৯৬০-এর দশক: বাঙালির আত্ম-সচেতনতা ছয় দফা আন্দোলন (১৯৬৬): বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের জন্য ছয় দফা ঘোষণা করেন। এটা ছিল পাকিস্তান থেকে আলাদা হওয়ার রূপরেখা। ১৯৬৯ গণ-অভ্যুত্থান: শেখ মুজিবের মুক্তির দাবিতে গণ-আন্দোলনে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান পদত্যাগে বাধ্য হন। ১৯৭০-এর নির্বাচন ও স্বাধীনতা যুদ্ধ ১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচন: আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয় লাভ করে, কিন্তু পাকিস্তান সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায়। ৭ মার্চ ১৯৭১: বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ — "এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম।" ২৫ মার্চ ১৯৭১: পাকিস্তানি বাহিনীর...

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পঞ্চাশ বছরের গল্প (৯৭৪-২০২৪ )

Image
  ১৯৭৪-২০২৪; ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পঞ্চাশ বছরের গল্প Sk Mizan . দেশে এখন 0 ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষের সময় দারিদ্রতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করেন। সেখান থেকেই দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে গ্রামের মানুষকে নিয়ে আসতে গ্রামীণ ব্যাংক শুরু করেন অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কর্মজীবনে সেই চেষ্টা তাকে এনে দিয়েছে অর্থনীতিতে শান্তিতে নোবেলের অর্জন। ক্ষুদ্র ঋণের মডেল বিশ্বে পেয়েছে সমাদৃত। যা দেশে ছেড়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যক্তি মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়াও বাংলাদেশকে নতুন করে পরিচয় এনে দিয়েছে। প্রান্তিকের মানুষকে স্বনির্ভর করতে ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রামের জোবরা গ্রামে শুরু হয় ছোট ছোট অঙ্কের ঋণ দেয়ার কাজ। মাত্র দু বছর আগেই দুর্ভিক্ষ দেখেছিলেন বাংলাদেশের মানুষ। দারিদ্র বিমোচনে কাজ করা প্রতিষ্ঠানটি একসময় হয়ে ওঠে গরিবের ব্যাংক। প্রান্তিকের মানুষের দ্বারা পরিচালিত। যেখানে নারীদের অংশগ্রহণ ৯৮ভাগ। ঋণ দেয়ার পদ্ধতি সংহতি দল পদ্ধতি। তাতে সমাজের একজন মানুষ আরেকজনের অর্থনীতি উন্নয়নে দলবদ্ধ অংশগ্রহণ করেন। গ্রামের দরিদ্র মানুষকে আর্থিক সংযুক্তির পরীক্ষামূলক এই উদ্যোগ ১৯৮৩ সালে 'গ্রামীণ ব্যা...